নয়াদিল্লি: দেশের প্রধান বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীদের আইফোন (iPhone) হ্যাক করার চেষ্টা হচ্ছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে এই অভিযোগকে ঘিরে তোলপাড় দেশ। খোদ রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) সাংবাদিক সম্মেলন করে আরও একবার আদানি (Adani)-মোদির (Modi) হরিহর আত্মা নিয়ে প্রশ্নবাণে বেঁধেন। কিন্তু, যাদের সতর্কবার্তা নিয়ে সাত কাণ্ড রামায়ণ, সেই অ্যাপল (Apple) জানিয়ে দিল, তাদের পাঠানো হ্যাকিংয়ের সতর্কবার্তার যে অ্যালার্ম মেসেজ এবং মোবাইল মালিকের মেলে গিয়েছে তা ভুল করে গিয়ে থাকতে পারে।
কারণ এই বার্তায় রাষ্ট্র বা সরকারি মদতপুষ্ট হ্যাকিং সম্ভাবনার নির্দিষ্ট কোনও লক্ষণ নেই। অথচ, এদিন সকাল থেকে তৃণমূল নেত্রী মহুয়া মৈত্র, কংগ্রেসের শশী থারুর, পবন খেরা, শিবসেনার প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদি ছাড়াও রাহুল গান্ধীর দফতরের তিনজনের কাছেও এই একই সতর্কবার্তা গিয়েছে। এছাড়াও সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব, আপের রাঘব চাড্ডা ও মিম নেতা আসাউদ্দিন ওয়েইসির কাছেও একই মেসেজ ও মেল গিয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে হইচই পড়ে যাওয়ার পরেই অ্যাপলের টেকনিক্যাল সাপোর্ট পেজে একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতি প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রের মদতে হ্যাকিং সিস্টেমে বহু অর্থ লাগে। এবং এই ব্যবস্থা অত্যন্ত আধুনিক, সূক্ষ্ম ও নিখুঁত হয়। এই ধরনের অ্যাটাক ধরতে গেলে থ্রেট ইন্টেলিজেন্স সিগন্যালের উপর ভরসা করতে হয়। যা সচরাচর ত্রুটিপূর্ণ এবং অসম্পূর্ণ হতে পারে। ফলে এমনটা হওয়া অসম্ভব নয় যে, কিছু নোটিফিকেশন অ্যালার্ম ভুল করে হয়ে যায় অথবা সেই অ্যাটাকারকে ডিটেক্ট করাই যায়নি।
অ্যাপল আরও বলেছে, কী কারণে এই নোটিফিকেশন গিয়েছে, তা এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়। তবে এর ফলে সরকারি অ্যাটাকাররা ডিটেক্টেড হওয়ার পথ এড়াতে অন্য পন্থা নিতে পারে। প্রসঙ্গত, এদিন সকাল থেকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিরোধী দলের নেতানেত্রীরা আইফোন হ্যাকের অভিযোগ তোলেন। তা নিয়ে বেলার দিকে সাংবাদিক সম্মেলনও করেন রাহুল গান্ধী।
রাহুল বলেন, বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা ও সাংবাদিকের কাছে অ্যাপলের তরফে এই মেসেজ গিয়েছে। কিন্তু, এর ফলে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা যাবে না। নরেন্দ্র মোদির আত্মা হলেন আদানি। আমরা মোদিকে কতটা আক্রমণ করলাম সেটা কোনও ব্যাপারই নয়। কারণ আত্মাটা যে অন্যখানে। আর সেটা আমরা এখন বুঝতে পেরে গিয়েছি। সে কারণে আমরা এখন মোদির আত্মাকে আক্রমণ করা শুরু করেছি। আর তার জন্যই এসব ঘটছে। তার জন্যই অ্যাপল এসব মেসেজ পাঠাচ্ছে।
রাহুল আরও তোপ দেগে বলেন, সরকারের ক্ষমতার সিঁড়ি এইভাবে বিন্যস্ত। যার এক নম্বরে রয়েছেন মিস্টার আদানি। দ্বিতীয় স্থানে নরেন্দ্র মোদি এবং থার্ড বেঞ্চে অমিত শাহ। দেশ খুব তাড়াতাড়ি টের পাবে যে প্রধানমন্ত্রী হলেন আদানির কর্মচারী। এবং আদানির হয়েই কাজ করেন।
শুধু যে দেশের অর্থ লুট করছেন তা নয়, মানুষের মুখের ভাষাও কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। এই যে এতগুলি ক্যামেরা আমার সামনে রয়েছে, এগুলোর অধিকাংশই আদানির, মন্তব্য রাহুলের। ফোন হ্যাকিংয়ের চেষ্টা নিয়ে বলেন, একটা আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে। একজন-দুজন নয়, গোটা বিরোধী জোটকে নিশানা করা হচ্ছে। এটা তো অপরাধীদের কাজ, চোরের কাজ!